লুবনা চর্যা- এর কবিতা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

অন্ধকারে বসে থাকে কিছু শবসাধক

অন্ধকারে বসে থাকে কিছু শবসাধক –

মৌনতা তাদের প্রিয় পানীয়

সন্ধ্যার পর থেকে তারা সেই পানীয়ের লোভে

জড়ো হতে থাকে পাখির বিষ্ঠা ভরা পার্কের বেঞ্চে।

শার্টের বোতাম ফুঁড়ে সদ্যোজাত শিশুর মতো বের হয়

রুমালে জড়ানো এক বোতল দেশী মৌনতা-

এমন সন্ধ্যার কথা সারাদিন ভেবে ভেবে

বসের একঘেয়ে উৎকট মুখ দেখে আর সব অন্যায় আব্দার মেনে

অবশেষে সূর্য অস্ত গেলে একে একে পিঁপড়ার মতো

সারি বেঁধে জড়ো হয় মৌনতা খাদকের দল।

অন্ধকারে বসে থাকে কিছু শবসাধক –

অফিসের জিম্মা থেকে রাতে বাড়িওয়ালার জিম্মায়

যাওয়ার আগ পর্যন্ত নির্ধারিত তাদের জীবৎকাল।

আর মাঝে মাঝে এই আয়ু বাড়তে বাড়তে

চলে যায় পর্যটন বাসে চেপে সমুদ্র সৈকত কিংবা বান্দরবন।

বাকি সময় তারা চলমান শব হয়ে করে যায়

পৃথিবীটা নিরীক্ষণ। ঠোঁটের এক কোণে লেগে থাকে

কিছু দীর্ঘশ্বাস আর অন্য কোণে ছিটেফোঁটা উৎসব।

অন্ধকারে বসে থাকে কিছু শবসাধক –

আলোতে তাদের অ্যালার্জি, ছায়াতেও পরে নেয় ডার্ক সানগ্লাস।

জীবনকে চির পিপাসার্ত মরুভূমি করে রেখে

তারা নাকি শিল্পে ফলাবে উচ্চফলনশীল ঘাস।

না খাওয়া পেটে ভরপুর তামাক জোটে-

বহুদিন গোসল না করা চুলে ক্ষুব্ধতার ফুল ফোটে।

অন্ধকারে বসে থাকে কিছু শবসাধক –

কোন কিছুতে তারা অবাক হয় না, কেননা ইতোমধ্যেই

শহরের গ্রন্থাগারগুলো থেকে অনেক বই তারা

প্যানকেক বানিয়ে খেয়ে ফেলেছে। এখন তাহারা

বিগত জ্ঞানের ঢেঁকুর তোলা ঘুমন্ত অজগর সাপ।

জোড়া শালিক, জোড়া ঘুঘু অথবা কাঠবেড়ালিকে 

প্রেম করতে দেখলেই শুধু ছোবল হানে।

কঙ্কালদেহ নিয়ে অন্ধকারে বসে থাকে অন্ধ শবসাধক।

প্রেমিকের হাতের কৃষ্ণচূড়া কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে-

কারণ আজন্ম  রক্তশূন্যতার রোগীর চেয়েও সে

ভয়াবহভাবে ফ্যাকাসে হয়ে আছে প্রেমশূন্যতায়!

মন্তব্য: