চিহ্ন থেকে যায় তবু
থেকে যায় কিছু অতীত চিহ্ন; যদিও উদ্যত বর্তমানÑমুছে ফেলতে সকল শবযাত্রার পদচ্ছাপ।
ডাক নাম ধরে কারো ডাকার কথা ছিলো বলে, বেলা পড়ে যাওয়া নদীর ঘাটে বসে ছিলো কেউ; একটা অচেনা পাখি উড়ে বেড়িয়েছে অজস্র বিকেল।
নদীর ঘোলা জলে আস্থা রাখা মানুষের মন বোঝে না ডানাওয়ালা পাখি। ডাক নাম ভুলে গিয়ে কেউ কেউ পেরিয়ে যায় মানচিত্রের সীমানা।
তবু কেউ অনন্তকাল বসে থাকে নদীর ঘাটে। কারো ডাক শোনার প্রতীক্ষায় ফুরিয়ে যায় সতেজ বসন্ত; মন পড়ে থাকে কোন সুদূর ভাঙা পারে। ফেনায়িত জলের সাথে কথোপকথন বুঝেছিলো যারা, তারা আজ সকলেই মৃত।
এখন ভাইরাল যুগ, কোনো কথা গোপন থাকে না। অথচ, একদিন ছিলো এমন নৈঃশব্দ্যকাল; বুকের ভিতর হিরোশিমা আর চোখের তারায় নাগাসাকি ঘুমাতো দিব্বি!
নদী মরে গেলে পার থেকে যায় তবু; কলমি লতায় ছেয়ে যাওয়া ঢালে, যেখানে একদিন অনবরত বেজেছিলো জলের সেতারÑসেখানে রয়ে গেছে আজো সেইসব অতীতচিহ্ন।
দাঁড়িয়ে থাকি
চলে যাবো, অন্য কোথাও, অন্য কোনো আকাশের তলে… এই কথা বলে থেমে দাঁড়ালে তুমি। থেমে যেতে যেতে অনেকেই চলার স্বপ্ন আঁকে; প্রাচীন দেয়ালে অঙ্কিত সময়চিত্রের দিকে তাকিয়ে ফেরা যায় না অতীতে। অতীত একটা মার্বেল, একটা নাটাই, কিংবা রেললাইনের বিকেল।
যাওয়া হবে না কোথাও
তুমি কোথাও যেতে পারবে না
কবিকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়
গাছের মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
বজ্রপ্রবাহ গা বেয়ে মাটিতে নেমে যাওয়া অবধি দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
কে যেনো বলেছিলো এইসব কথা; কানে কানে, ফিসফিসিয়ে।
শিশুর হাসির দিকে তাকালে পৃথিবীকে যেরকম সুন্দর মনে হয়, উঠতি বালিকার উচ্ছল চাহনিতে যেরকম স্বচ্ছ মনে হয় এই সভ্যতাকে; সেরকম একটা অটল বিশ্বাস নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি শুধু।