টেড হিউজের কবিতা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

টেড হিউজ ১৯৩০ সালের ১৭ আগস্ট ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ার পেনিনসের কেলভার নদীর তীরবর্তী মিথনম্রয়ডে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম এডওয়ার্ড জেমস হিউজ। তিনি একাধারে কবি, নাট্যকর ও শিশুতোষ লেখক ছিলেন। তিনি তাঁর প্রজন্মের সেরা লেখক ও বিংশ শতাব্দীর অন্যতম লেখক ছিলেন। তাঁর পিতা উইলিয়াম জেমস পেশায় কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। 

টেড হিউজ মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকেই কবিতা লিখতে শুরু করেন। স্কুল জীবনেই তিনি কবিতা লিখে পুরস্কার হিসেবে অগ্রজ কবি রবার্ট গ্রেভস্-এর ‘হোয়াইট গোল্ডেস’ গ্রন্থখানি পান। এ গ্রন্থটি হিউজের কবিসত্তা গড়ে তোলার পিছনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। ১৯৫১ সালে তিনি ক্যামব্রিজ শ্বিবিদ্যালয় থেকে প্রত্নতত্ত্ব এবং নৃতত্ত্বে অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকুরিজীবনে তিনি বিচিত্র পেশায় যুক্ত হয়েছিলেন কিন্তু কোন পেশাতেই স্থায়ী হয়নি। 

টেড হিউজের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘হিউক ইন দ্য রেইন’ প্রকাশিত হওয়ার আগে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমেরিকান কবি সিলভিয়া প্লাথের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং ১৯৫৬ সালে তা পরিণয়ে রূপান্তরিত হয়। ১৯৫৭ সালে দু’জনেই আমেরিকায় যান। সেখানে সিলভিয়া স্মিথ কলেজ ও টেড হিউজ ম্যাসাচুয়েস-এ শিক্ষকতায় নিয়োজিত হন। কিন্তু মাত্র দু’বছরের মাথায় ১৯৫৭ সালে দু’জনেই লন্ডনে ফিরে আসেন। এ সময়ই তাদের উল্লেখযোগ্য লেখাগুলো রচিত ও প্রকাশিত হয়। টেড হিউজের কবিতার বই ‘লুপারকল’ এবং সিলভিয়ার ‘দি কলুসাস’ এ সময়ে মুদ্রিত হয়। তাদের প্রথম সন্তান ফিডা রেবেকা ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। 

হিউজ ১৯৬১ সালে সপরিবারে লন্ডন ছেড়ে ডিভন-এ চলে আসেন। ১৯৬২ সালে দ্বিতীয় সন্তান নিকোলাস ফারার জন্ম গ্রহণ করেন। এ বছরের মাঝামাঝি থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে টানাপোড়েন শুরু হয় এবং হিউজের সঙ্গে আসিয়া ওয়েভিল গ্যাস স্টোভের নামের অন্য নারীর মানসিক সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। এর অল্প কিছুদিন পরেই ১৯৬৩ সালে সিলভিয়া আত্মহনন করেন। 

১৯৬৬ সালে হিউজ আয়ারল্যান্ডে চলে যান। কিন্তু দুর্ভাগ্য সেখানেও তিনি সংসার গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার সঙ্গিনী আসিয়া একই পন্থায় আত্মহত্যা করেন ও তাদের ৪ বছরের কন্যা আলেকজান্দ্রা তাতিয়ানা এলিসকে ওরফে স্যুরকে হত্যা করেন। পরবর্তীতে হিউজ ১৯৭০ সালে ডিভনের অধিবাসী ক্যারল অচার্ডকে বিয়ে করেন। হিউজের সবচেয়ে আলোকিত গ্রন্থ ‘দি ক্রো’ ১৯৭০ সালে প্রকাশিত হয়। 

টেড হিউজ ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৯৮ সালের ২৮ অক্টোবর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ব্রিটিশ রাজকবি ছিলেন। তিনি মৃত্যুর পূর্বে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কর্তৃক ‘অর্ডার অব মেরিট’ সম্মাননা লাভ করেন। তিনি কবিতায় ‘সমারসেট মম পুরস্কার’ অর্জন করেন।]          

মুসা’র অনুশাসন

অনুবাদ : মুসাফির নজরুল

একটি মাল তোলা যন্ত্র তোলা হলো এবং আমি হেলে পড়লাম,

দরজার অর্ধাংশ ঊর্ধ্বস্থিত হলো তীক্ষ্ণ ধারালো ছুরি। 

আমার বাম পা কব্জার উপর উঠল, দেখা গেল পেপের গুল্মলতা,

উজ্জ্বল আলোর দ্যুতিতে দীপ্যমান সাদা দাগ, হঠাৎ বন্ধ দরজা খুলল।

মস্তিষ্কের পশ্চাৎ দিকে

         কৃষ্ণবর্ণের গভীরতা। 

তারাগুলো ধীরস্থির, কিন্তু ভ্যাপ্সা গরমে ভারী নিঃশ্বাসের শব্দ

তীক্ষ্ম গন্ধযুক্ত শক্তিশালী বর্ণহীন গ্যাস, 

শাবকের তীব্র দুর্গন্ধ, জিহ্বার শিরায়, 

বাতাসকে আলিঙ্গন করছে আমার পরিবর্তে।

তারপর ধীরে ধীরে অর্ন্তচোখে-

ললাট যেন ইট পাথরের গাঁথুনী, জলযানের পাটাতনের গ্রীবা

প্রান্ত ছুঁয়ে কিছু একটা আসছে উপসাগরের কিনারায়,

দুনিয়ায় শোনা য়ায় না, এতো ম্রিয়মান এর কণ্ঠধ্বনি।  

দাঁড়িয়ে ঘুমন্ত, বন্দুকের মুখবন্ধনী দুলছে উড়ন্ত বাতাসে, 

গোলাকার পৃথিবীর প্রান্তে আমি ঝুলন্ত চিৎকারে ভাসমান।

কিছুই না তার কাছে, কিছুই না আমাদের অলক্ষ্য অস্তিত্ব

কে যেন খুঁজছে তাকে

    প্রত্যেক গোধুলিলগ্নে কৃষকেরা সংকীর্ণ শৈলশ্রেণির পাদদেশে। 

পুকুরের নীচে পানি পান করতে এবং বাতাসের গন্ধ

তথাপিও সে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না কিন্তু কৃষক

তাকে নির্দেশ করেছে এটা নেওয়ার জন্য, 

যদিও সে কিছুই জানে না।

বয়সে ভারে তার পিতৃপুরুষের মত সংযমী-

বন্ধ, যখন সে গর্ভধারণ করে অন্ধকারকে বিকীর্ণ করে।

মন্তব্য: