কাজী কল্লোল এর কবিতা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

কবিতার খাতা

সেদিন এক অজুত বছর পর, হঠাৎ পাওয়া তোমার লেখা ছুঁতেই চমকে ওঠে অঙ্গুলী আমার! দৃষ্টিপটে ঝাঁপসা মুখচ্ছবির মতোই অকাল শ্রাবণের ঝাটু এসে লাগলো দু’চোখে, ফেলে যাওয়া পুরানোগন্ধী তোমার হ্যান্ডব্যাগের ডায়েরীর মাঝে – তুমি!

আমার নিঃসঙ্গ দু’পা ঘিরে তখন এক অচেনা রোদ্দুরের গড়াগড়ি- আঁচড়ে দিচ্ছিল আদর। চিলেকোঠায় স্মৃতিকাতর আকাশ-নীলের বুকে বিলি-কাটা চিল- কিছু প্রিয় কষ্ট.. হঠাৎ সেই চুরি যাওয়া আলোয় খুজে পেলাম তোমার মেরুন ডায়রীখানি।

স্থানু ডেভিডের শূণ্যতা নিয়ে পড়লাম; দেখলাম ঝরে পড়ছে শব্দ তোমার- সরসর ঝুরঝুর, এক যাদুবাস্তবতায় তখন মগজের কোথায় যেন মনটেজের খুটখাট কারসাজি ট্যাপের টপ-টপ-নিস্তন্ধতা- সময়ের ঘোড়া- খটাখট খটাখট ।

আহা! ভেতর-আকাশে তখন ফুলে উঠলো পাল, দশদিক কাপিয়ে বাজলেঅ শীখ পাঞ্চজন্য, ক্ৰমশঃ মন্থরিত, ফেনায়িত স্মৃতি-সমুদ্র- মুহুর্তমাঝে হলো অফুরন্ত শস্যের অন্ধুরোদগম বাতাসের দিকবিদিক শনশনে আদিগন্ত ডুবে গেল অস্তিত্ব আমার- অর্ফিউস সুরে।

বুনে দেয়া ড্রাগনের দাঁতের মতোই জেগে ওঠা অজস্র শব্দের দল এসে ঘিরে ধরলো আমার চারধার, পাতার পাঁজর ফুঁড়ে আসা তোমার সে অক্ষরে, প্রিয় চিত্রকল্পে বিবশ হলো প্রতিটি কোষএকসময় নামলো বৃষ্টি তামাটে আকাশের বুক চিরে, ভিজে গেল অধর-ওষ্ঠ-চিবুক।

আর্দ্র আমার চোখ যখন মেলল পাতা ধীরে, তখন চিলেকোঠার পৃথিবী শব্দহীন, শুনশান; বাইরে রাত্রির জঠর ছেড়ে সন্ধ্যার কালো বড়িয়েছে হাত তার আলোকের দিকে; প্রমিত সেই আধারে তোমার ঝুঁকে লেখা অক্ষরগুলো দেখতে পেলাম না আর।

মন্তব্য: