ধুলোর কুয়াশায় মিশে পূর্বপুরুষ
সুদীর্ঘকাল অপেক্ষায় আছি
অথচ তুমি একবারো পা বাড়ালে না
বিকেলের ভাবনাগুলো হিম হয়ে আছে-
কতদূরে তোমার সৈকত?
আমি ভুল করে ঢেউয়ের রূপালী ঠোঁটে চুমু খাই
মায়াবি জলে শেকড় ডুবিয়ে রাখি
কে যেন ধুলো উড়িয়ে যায় অপেক্ষার ভেতর…
আর সেই ধুলোর কুয়াশায় মিশে আছে আমাদের পূর্বপুরুষ
ঋতুপ্রাপ্ত ভ্রুণের ছায়ায়
যে ঢেউ সমুদ্র ঝাপিয়ে যায়-
সে তোমার হাসির উচ্ছ্বাস
আমি সতন্ত্র বালক- সমুদ্র বুঝিনি বলে
জলরাশি হয়ে আছে ভয়ের কপাট-
ইচ্ছেগুলো বালুচরের মতো
কেবলই চুম্বনের দিকে ডাকে
একদিন একাকীত্বের আশ্রম ভেঙে
তুমি ফিরবেই; অনুভূতির গভীর আলিঙ্গনে
সেদিন বেদনার শব্দভাষ্য উড়িয়ে
টেনে নেব ঋতুপ্রাপ্ত ভ্রুণের ছায়ায়।
কেউ সুখী নয়
ঈশ্বর যেদিন মুখ ফেরালেন
সেই থেকে মানুষ পাপিষ্ঠ
কোরান গীতা বেদ বাইবেল
সবই যেন কালের ধারাপাত-
মানুষ পৃথিবীর ধ্বংস চায়
চায় আত্নার স্বাধীন পাপাচার…
মহাকালে কেউ সুখী নয়
মক্কা, মথুরা কিংবা বৃন্দাবনে…
উল্টানো আকাশ
মহাকাল ধরে আছি হাতের মুঠোয়-
ভাবি তার তলদেশে কতটা জমেছে
দুঃসময় অথবা বিপ্লব…
মানুষ সভ্যতার বুকে মারছে শ্রেণিযুদ্ধের চাবুক
তাই প্রার্থনার হাত গড়িয়ে
সূর্য হয়ে উঠছে বিপ্লবী…
ঈশ্বর প্রেমময় রাত্রিগুলো তুলে নিচ্ছে গ্রীবায়-
পৃথিবীতে যারা স্রষ্টা তারা দেখছে নক্ষত্রহীন
ধুয়াশার আকাশ।
আন্তঃনগর ট্রেন
যুদ্ধগুলো হাত গড়িয়ে ঝরে পড়ছে কফিনে
মৃত জোছনা তুলে ছুটে যাচ্ছে অন্তঃনগর ট্রেন
সোনালী সকালের প্রার্থনায়
স্মৃতির ফলক ধরে আছে ইচ্ছেঘুড়ি
মৃত নদীর কঙ্কাল দেখে হেসে ওঠে রকমারি লেক
আমরা যখন শান্তির চুক্তিতে মুখোমুখি দাঁড়াই
দেখি মধ্যবর্তী সেতু ধরে উঠে আসছে দীর্ঘ সরিসৃপ…
পথের নৈঃশব্দ্য ভেঙে
তার জন্য, সব গল্প নিয়ে বসে আছি
নিজের মতো করে পাবো বলে-
মেলে দিয়েছি নিরপেক্ষ হাত
পথের নৈঃশব্দ্য ভেঙে
জলের দহন নিয়ে সে আসবে
কাঁচে জমে থাকা কুয়াশা সরিয়ে
প্রস্ফুটিত করেছি নিজেকে
উসকে ওঠা ইচ্ছেগুলো দু’চোখে আকাশ এনেছে
সে জানে না, আমার যতো গল্প-
সবই হতে পারে নষ্ট কথা
সোনালী সকালের প্রার্থনায়
যুদ্ধগুলো হাত গড়িয়ে ঝরে পড়ছে কফিনে
মৃত জোছনা তুলে ছুটে যাচ্ছে আন্তঃনগর ট্রেন
সোনালী সকালের প্রার্থনায়
স্মৃতির ফলক ধরে আছে ইচ্ছেঘুড়ি
মৃত নদীর কঙ্কাল দেখে হেসে ওঠে রকমারি লেক
আমরা যখন শান্তির চুক্তিতে মুখোমুখি দাঁড়াই
মধ্যবর্তী সেতু ধরে উঠে আসছে দীর্ঘশ্বাস…
শূন্যতা নিয়ে খেলা
রাতময় এক আকাশ বিষণ্নতা-
স্মৃতির প্রসব গন্ধ ছড়ায় বুনো বাতাস
অনিদ্র চোখের ভুগোলে ভাসে জলছাপ মুখ
জোনাকিরা আলোর ঝিলিক রেখে যায় সেইসব মুগ্ধ মুখে-
রেখে যায় চন্দ্ররাত্রি আর স্পর্শের অনুরাগ!
তর্জনি উচিয়ে তার রাতের শাসনে
বৃত্তের সময় হিতাহিত হয়ে ওঠে
অতলস্পর্শি রাতের পৃষ্ঠায় তখন শূন্যতা নিয়ে খেলা-
খেলে চলি অবিরাম…
শুভধ্বনি বেজে যাও
আর একটু অপেক্ষা কর
মধ্যরাত ভেঙে নুয়ে পড়ুক ঘুমাতুর চাঁদ-
যা ছিল বলার, হঠাৎ বৃষ্টির মত বলে দিয়েছি তা
শভধ্বনি বেজে যাও জোনাক পালকে
আর কিছু হিমায়িত মেঘ ঈর্ষায় উড়ে যাক-
রাতের গহীনে আর কিছু মায়াবী পাখি…
এই যে শীতবৃক্ষ জমে থাকা জল
কুয়াশার নদীতে ভাসমান রাত
ঘুমের পারদ উড়ানো বাতাস
আর একটু দেখে যাও…
দূরে গীর্জর ধ্বনি ভেসে এলে
সূর্য ভেঙে দেবে এই জল-সংসার।
অক্ষমতা
সেদিন রাত অদ্ভুত স্থির ছিল
নক্ষত্রগুলোও!
রাতময় কুয়াশা, তবু তার শরীর থেকে বের হচ্ছিল নারীর গন্ধ
অক্ষমতায় দুঃখকে বৃত্ত বা ত্রিভুজে রেখে
প্রচার করতে পারিনি স্পর্শের দুঃসাহস!
ভদ্রতার কাছে ‘ইচ্ছে’ তুলে দিয়েছি বারংবার
অথচ মুগ্ধ চোখে দেখেছি তার
বিলাসী ঠোঁটের মৃদু কাঁপন-
ভেতরে স্তর ভাঙা প্লাবন…
পবিত্র জোছনা-প্লাবিত
একটি ছায়া কেবলি সরে যাচ্ছে
সরে যাচ্ছে- উত্তাপহীন নিঃস্পৃহ স্বপ্ন থেকে
একটি বিধ্বস্ত হাত- হাতের স্পর্শ থেকে দূরে যাচ্ছে-
দূরে যাচ্ছে জীর্ণ কুয়াশা ছিঁড়ে- অনন্ত বিষণ্নতায়
ক্ষয়গন্ধ মেখে ডুবে যাচ্ছে রোদ্র বুকে
একটি স্নেহশীল মুখ- অসীমে-
একটি বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর- যেন স্বরচ্যুত রক্তাক্ত বিহঙ্গ
একটি হিমায়িত ইতিহাস-
একটি তর্জনী যেন প্রশ্নবোধক চিহ্ন- স্বাধীন মানচিত্রে
এই বিচ্ছিন্নতার কোন উত্তর নেই
বুনো জন্তুর অরণ্যে
তবুও জলের সজ্জা ছেড়ে উঠে আসা আলোয়
সেই ছায়াও উঠে আসে
পবিত্র জোছনা-প্লাবিত এই বঙ্গভূমে।