কবি শামীম খানের কাব্যগ্রন্থ ‘তোমার কাছে চাইবো কেন’ সাবলীল ভাষার এক প্রেমের আধার ।। শিকদার ওয়ালিউজ্জামান

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আমরা বেহুদাই ত্রিশ-ষাট-নব্বই কিংবা শূন্য শূন্য খেলি। তারপর দশক-দশক, আরও পরে শতক-শতক। আমরা এমন যুগ সৃষ্টি করতে পারিনি রবীন্দ্রযুগের পর যেটা হতে পারতো পঞ্চপাণ্ডব যুগ, কিংবা আল মাহমুদ বা শামসুর রাহমান যুগ। এর পর আমরা আর এগোতে পারছিনে। কিন্তু কেন? সিমাবদ্ধতা কোথায়? দশক-দশক খেলা নিরর্থক হয়ে যায় যখন দেখি তৃতীয় দশকে এসেও কেউ ষাট সত্তর কিংবা নব্বইয়ের কবিদের ঘরানায় লিখে যাচ্ছেন। শব্দচয়ন-উপমা-দর্শন এর নিরিখে তাকে আপনি অস্বীকারও করতে পারছেন না। যদি এই সময়ে এসে কারো লেখায় মহাদেব সাহা, নির্মলেন্দু গুণ বা আবুল হাসানের ছায়াকে আবিস্কার করেন তাকে কি আপনি অ-কবি বলবেন? প্রিয় পাঠক, পছন্দ আপনার, তাই দায়টাও আপনার। আমি যতই সমীকরণ নিয়ে বসি না কেন আপনি তো গ্রহন করবেন না। অন্যভাবে যদি বলি, কবিতা লিখতে এসে যদি আমি নিজস্ব স্বর তৈরি না করতেই পারলাম তবে আমি লিখব কেন? কবিতার যেমন আকাল নেই, আবার বাংলা সাহিত্যে ত্রিশের পর যুগোত্তীর্ণ কবিতা সৃষ্টি হলোই বা কই? এখানে দায়টা কিন্তু আমরা যারা লিখছি তাদের। এতসব হিসেব-নিকেষ এর পরও কেউ কেউ আবার সব গণ্ডি মাড়িয়ে নিজের সত্তাকে জানান দেন সময় পেরিয়ে, কারো কাছে মনে হতে পারে অসময়ে। তা হোক বৈকি! তাতে কবিতা কিংবা কবির কিছুই যায় আসে না। দিন শেষে স্মৃতিতে আঁচড় কাটে একটি কবিতাই। আবার অন্ধকার কেটে ভোরও নিয়ে আসে কবিতা।

আমার হাতে একটি কবিতার বই- ‘তোমার কাছে চাইবো কেন’। জনক শামীম খান। বইটি যখন কবিবন্ধুদের কাছে পৌঁছবে অনেকের চোখ ছানাবড়া হতে পারে। নাও পারে। তবে কিছুটা হতচকিত হবেন তা বলতেই পারি। শামীম খান মূলত নব্বই কালপর্বের কবি। আশি’র শেষ দিকে কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটলেও লিখে গেছেন- নব্বই, প্রথম আর দ্বিতীয় দশক জুড়ে। এখনও লিখছেন। পাঠক-কবিগণ হতচকিত হবেন এই কারণে যে, তিনি কোন দশকীয় সংকলনভুক্ত কবি নন। তৃতীয় দশকে এসে নব্বই দশকের কোন কবির প্রথম বই ভাবা যায়! যেখানে নব্বইয়ের কবিরা কবিতা সংগ্রহ, কবিতা সমগ্র, নির্বাচিত কবিতা প্রকাশ করে নিজেদের ইতি টানতে চাইছেন! সেখানে শামীম খান প্রকাশ করলেন তার প্রথম কবিতার বই! সত্যিই বিস্ময়!

এই বিস্ময়কবির কবিতায় পাঠককে ডুব দেওয়ানোর আগে কবিকে যতটা স্টাডি করেছি তার কিছু বলতে চাই। কারণ কবি আর কবিতা কোন ভিন্ন সত্তা হতে পারে না। ‘তোমার কাছে চাইব কেন’ শিরোনামটি অবশ্যই পাঠককে আধ্যাত্মবাদের চেতনায় নাড়া দেবে। এ যেন প্রেমের এক অমোঘ আধার। এখানেই প্রেম-বিরহ-পাওয়া-না পাওয়া-অভিমান-ত্যাগ-সমর্পন-বিসর্জন-ধ্যান সবকিছু যেন একাকার হয়ে গেছে। প্রিয় পাঠক শিরোনামটি আপনাকে ভাবাতে বাধ্য। কবি শামীম খান জাতকবি। তার মধ্যে আরোপ কথাটি একেবারেই বেমানান। নিয়ত ব্যস্ততা আর কর্মযজ্ঞের মাঝেও তিনি ধ্যানমগ্ন থাকেন। সবকিছুকেই তিনি পাঠ করেন ভেতরের চোখ দিয়ে। তার পাঠের মধ্যে মানুষ, সমাজ, প্রকৃতি, ধর্ম, রাজনীতি কোনকিছুই বাদ পড়ে না। তাইতো তিনি সাধক। শামীম খান তার এই ধ্যানীশক্তি দিয়ে অগ্রজ-অনুজ অনেক কবির প্রেমসিক্ত। তিনি যুগ যুগ ধরে স্বল্প লিখেও চেনা জগতের সকলের প্রিয় কবি হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। হৃদয়ের আসন পেলে তার আর চাওয়ার কীইবা প্রয়োজন? এমন ভাবনা থেকেই হয়তো- ‘তোমার কাছে চাইবো কেন’। সবকিছুর উর্ধ্বে যার বাস তার বিচরণ কিন্তু পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণ সবখানেই। সবই তার জানা। সবই চেনা। সুতরাং ঈশ্বরবন্দনা হৃদয়ের। ভালোবাসার। এখানে চাওয়ার বা লেনদেনের বিষয় নেই। এ এক গভীরের সমীকরণ। সেখানে পৌঁছতে গেলে আপনাকে প্রেমিক হতেই হবে। কবি শামীম খান তেমনই এক প্রেমপাত্র। তার বাইরে হিমালয়, ভেতরে প্রেমের সমুদ্র। এমন ভাবনা থেকেই তার উচ্চারণ-
তোমার জন্য কেমন করে মন
এই শহরে জানে তা ক’জন
কয়জনে আর খবর রাখে তার
এই যে তুমি কেমন তুমি আমার।

মাতা-স্বদেশ-ঈশ্বর শামীম খানের কবিতার ধ্যান। ভালোবাসার নির্মোহ শক্তি। তিনি সাবলীল ভাষায় নিজেকে ব্যক্ত করতে পেরেছেন এটাই তার প্রধান শক্তি। কোন রহস্যের আবরণে তিনি কবিতাকে আবদ্ধ রাখেন নি। ‘আমার স্বদেশ’ কবিতায় তার দেশপ্রেম এমনভাবে পাই-
কোন দেশে নেই এত জল
নদীর অতল তলে
চাঁদের কিরণ মাখা
এত বেশি রাত্রি নেই
এত সবুজ কোন দেশে নেই

মাকে তিনি রেখেছেন হৃদয়ের কবচ হিসেবে। এই প্রেম বহমান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। এমন আবেশ খুঁজে পাই ‘মা’ কবিতায়-
মায়ের গানে আমার মেয়ে
ঘুমিয়ে যখন পড়ে
আমার মা ঘুমিয়ে থাকেন
ছোট্ট মাটির ঘরে।

আগেই বলেছি শামীম খান মননে মগজে ধ্যানী কবি। তিনি তার এই ধ্যানে সবখানেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব টের পান। স্কুল থেকে ভেসে আসা শিশুদের কণ্ঠই যেন ঈশ্বরকণ্ঠ। নদী-সবুজ-মহাজ্যোতিষ্ক সবখানেই ঈশ্বরবন্দনাÑ প্রতিরাতের আরাধ্য প্রার্থনা। এমন ধ্যানী আবেশ পাঠককে নিষ্পাপতার রাজ্যে বিচরণ করাতে সক্ষম যখন শামীম খানের কবিতায় দেখি-
এই নীল আকাশ- শস্য দানার মেঘ
ধবল রোদ- বৃষ্টির মিহিদানায়
ফসলের হাসি উদ্বেগ- এ সবই চিরায়ত ঈশ্বর
ক্লাশরুম থেকে ভেসে আসা কণ্ঠস্বরই ঈশ্বর।

কবির আকূলতায় থাকে শুভ্রতা, মঙ্গলচিন্তা, সকলের সাধ পূরণের ইচ্ছা। এমন সাধ পূরণে কবি শামীম খান প্রকৃতিকে চিনিয়ে দেন নীরেট সাবলীলতায়। শব্দের জট সেখানে নেই। ভাবনার বৈপরীত্বও নেই। আছে কেবল এক ঝাঁক আশাবাদ। এমনই ধারণা পাই ‘বেঁচে থাক’ কবিতায়-
বেঁচে থাক রোদের ফাঁদ
নতুন ধান নতুন জাত
মাটির উঠোন জোছনা রাত
ইচ্ছে ডানার সুপ্রভাত

শামীম খানের স্টাডি তীক্ষè ক্ষুরধার। তার তীক্ষè ভাবনায় জমা হতে থাকে ক্ষয়-অবক্ষয়। ক্ষয়ে যাওয়া মানুষ, সমাজ রাজনীতি, পুড়ে যাওয়া বিবর্ণ সময়। কংক্রীটের ভেতর যেন সভ্যতা ঢুকে গেছে সস্তা সওদা হয়ে। এই সওদায় সবুজের কোন দাম নেই। কবি শামীম খানকে সমকালীন পোড় খাওয়া সময় ভাবিয়ে তোলে। ‘এই সময়’ কবিতাটি তেমনই এক সার্থক বয়ান। তিনি এখানে উপমার প্রাণবন্ত ব্যবহার করেছেন। পোশাকী মাছ, নমরুদ প্রেমিক, সুরক্ষার ডিপফ্রিজ, পিক্সেল ডট-মাংশাসী প্রাণী এমন কিছু সার্থক প্রয়োগ। আবার কোন আবরণ না রেখে সরাসরিও তিনি বলেছেন তার কবিতায়-
তবে কি মানুষ এখন শুধুই পিক্সেলডট-মাংশাসী প্রাণী উদ্ভট!
তুমি যাকে দেব ভেবে পূজারি
কালের অজাত খেয়ালে সে এখন অস্পৃশ্য কেউ
শহরের ব্যস্ত মোড়ে
রাজনীতির নষ্ট খতিয়ানে মোড়া মুখ
ভীষণ ভয়ংকর।

শামীম খানের বড় চমক হলো- অল্পস্বল্প কথায় পাঠককে ভাবনার গভীরে টেনে নেওয়া। ‘কষ্ট’, ‘সাঁকো’, ‘পুরুষমাত্রই’, ‘ঘর’ এমন কিছু বিস্ময়জাগানিয়া কবিতা। ‘কষ্ট’ কবিতাটি এমন-
তোমার মুখে রোদ্র এসে থমকে থাকে
নষ্ট চোখে দিব্যলোকে দেখতে পাই,
এই শহরে হয়তো কারো নেই জানা-
আমি কেন তোমায় দেখে কষ্ট পাই।

‘ঢল’ কবিতায় চমক পাই এভাবে-
গাছেদের ছবিগুলো
মেঘ হয়ে থাকলো
আকাশের নীল চোখ
মনে মনে রাখলো।

কবিমাত্রেই জিজ্ঞাসা থাকে। সেই জিজ্ঞাসা কার কাছে? পাঠকসত্তার সাথে এমন জিজ্ঞাসা মিলে যায়। যেতে বাধ্য যদি কবিতা সার্থক হয়। কবি যে আসনে বসে থাকেন উত্তর তার জানা থাকে তবুও যেন জিজ্ঞাসার ভা-ার ফুরোতে চায় না। একটা জিজ্ঞাসার পর আরেকটি জিজ্ঞাসা আসতেই থাকে। ‘জাতিস্বর’ কবিতাটি তেমনই জিজ্ঞাসার প্রমাণপত্র-
এই যে কাল
কালের স্রোতে মহাকাল
যায় কি বোঝা
আর কি রঙে হচ্ছে গাঢ়।

কবির ভাবনা আত্মবিশ্বাসের। আত্মবিশ্বাসী না হলে কবিতা কখনোই অমরত্বের বাণী হতে পারে না। অমরত্ব এক অধরা ফল। কেউ পায়। কেউ পায় না। সকলেই চায়। সেই চাওয়া থেকে শত ইচ্ছে আর আকক্সক্ষা। প্রতিটি সম্ভাবনাই কবির আকাক্সক্ষা। দেয়াল ভাঙার সে দুঃসাহস কবিই দেখাতে পারেন। অচেনা প্রান্তরকে নিজের করে যিনি ভাবতে পারেন তিনিই কবি কিংবা কবিসত্তা। শামীম খানের ইচ্ছেশক্তি প্রবল। ‘যদি ইচ্ছে করি’ কবিতায় আমরা তেমনটিই দেখতে পাই-
যদি ইচ্ছে করি
বিস্তৃত এ ব্যবধান ভেঙে যাবে এক্ষুনি
রাত বিরাতে তোমার ছায়া খুঁজে খুঁজে
অচেনা প্রান্তে আর
ভুলেও ফেরাবোনা চোখ কোনদিনই।

যদি ইচ্ছে করি
তোমার আমার চেনা জানা এইসব সেও
নিমিষেই মুছে দেব এখনি।

কবিতো সাধারণ কেউ নন। তার চাওয়া-ভাবনা কেনইবা সাধারণ হবে? ব্যাতিক্রমী চিন্তার ধারকই কবি। একাকীত্বকে কবি আনন্দচিত্তেই উপভোগ করেন। হাসতে পারেন অনেক বিষণœতায়। আলো জ্বালাতে সক্ষম নীরেট অন্ধকারেও। শামীম খান তেমনই একজন কবি। অনেক কোলাহলের মধ্যে থেকেও একাকীত্বই তার আরাধনা। ‘এখন ঘুমোতে চাই’ কবিতাটি একাকীত্বের ঘুম কামনার একটি দারুণ স্বাক্ষর-
তোমাদের পোড়া বাড়িটার মত
সুনসান একটা ঘর চাই এখন
আমি আর আমার একাকীত্ব
পাশাপাশি থাকতে পারি অনায়াসে
এমন নিরিবিলি একটা কক্ষ চাই।

কিছু ইচ্ছার অপূর্ণতা থেকেই যায়। যে অপূর্ণতা কবিকে রাত্রিদিন দগ্ধ করতেই থাকে। ‘তোমার শহর দেখার ইচ্ছে ছিল’ তেমনই একটি কবিতা যেখানে না পাওয়ার আক্ষেপ পাই-
শুনেছিলাম সেই শহরে
বরফ ঢাকা পাহাড় থাকে
পাহাড় ছুঁলেই ভালো লাগা
ভালোবাসার ফাগুন জাগে।
অনেক কিছুই ছোঁয়া হলো
পাহাড় হলো না।
তোমার শহর দেখার ইচ্ছে ছিল
পূরণ হলো না।

সময় আর অসময়ের প্রবাহমানতাকে কবি কখনোই এড়াতে পারেন না। এ সময়ের বয়ানেই কবি রেখে যান তার দিনিলিপি। অজ¯্র অভিমান-রাগ-অনুরাগ- ক্ষোভ-বিদ্বেষ। দিনযাপনকে তিনি পরতে পরতে ভাবনার সিঁড়ি বানান কালো অক্ষরে। ‘রাত্রিদিন’ কবিতায় কবি শামীম খান প্রবাহিত সময়ের জোয়াল আটকাতে চান। কিন্তু কেই বা পেরেছেন কালের পরিক্রমায়? এমনই উচ্চারণ পাই কবিতাটিতেÑ
দিনে রাতে এভাবেই
বয়সটা বাড়ছে,
মসৃন ত্বক জুড়ে
কত রেখা ভাসছে।
রেখাগুলো দেখি আর
প্রতিদিন ভেবে যাই
এই দিন কবে জানি
সেই দিন হয়ে যায়।

শামীম খানের অনেক কবিতায়ই অন্ধকার সময়ের অচলায়তনের ব্যাখ্যা পাই। এমন অন্ধকারে যাপিত জীবনের নৈরাশ্য ভেসে ওঠে। আমাদের এই ক্ষয়ে যাওয়া প্রজন্ম আর সময় কবিকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার জলে ভাসাবে এমনটাই স্বাভাবিক। এ জলে আমাদের স্বপ্নগুলো কেবলই ডুবতে থাকে। ‘আমাদের স্বপ্ন’ তেমনই একটি কবিতা-
আমাদের স্বপ্নগুলো
আজীবন স্বপ্নই রয়ে যায়
অদ্ভুত বিত্তের আজন্ম লিপ্সায়।

কিন্তু কবিকে তো হতাশায় ডুবলে চলবে না। তিনি পুড়বেন, ডুববেন। তবু আমাদের তরণী ভাসিয়ে রাখার প্রয়াস করবেন। আমরা কবির কাছেই দুঃসময়ের কপাট খোলার চাবি পেতে চাই। শামীম খান আশাবাদের তেমনই একটি চাবি। ‘সে এলেই’ কবিতাটি আশাবাদের স্মারকÑ
সে এলেই
আমাদের অভাবী চৌকাঠ
জীর্ণতার খোলস ছাড়ে অনায়াসে
যেভাবে চেনা দিন অচেনা সন্ধ্যায়
যেভাবে এই আমি
এই সোনরোদ এমন অবেলায়।

বাংলা একাডেমি’র উপ-পরিচালক ড. তপন বাগচী কবি শামীম খানের ‘তোমার কাছে চাইবো কেন’ কাব্যগ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছেন-
‘নির্মাণ কৌশল বা প্রকরণে অভিনবত্ব না থাকলেও তিনি অযথা শব্দের ঝংকারে কবিতাকে দুর্বোধ্য করে তুলতে চাননি; কবিতার অনুষজ্ঞ ছন্দকেও তিনি অস্বীকার করেন নি। যে কারণে তার কবিতা হয়ে উঠেছে গীতল ও মৃন্ময়। সহজ শব্দের ঠাঁস বুননে তিনি কবিতার অন্তঃস্থলে রুয়ে দিতে জানেন গভীর এক বোধ। যে কারণে তার কবিতা পাঠে চিন্তার পরিসর বিস্তৃত হয়।’
কবি শামীম খানের কবিতা ব্যাখ্যায় আমি ড. তপন বাগচীর সাথে একমত পোষণ করছি। সেই সাথে বলতে চাই নব্বইয়ের কবিদের কবিতায় যে বহুমাত্রিক চিন্তন, দর্শন আর কবিতার বয়ানশৈলি ষাট সত্তর আর আশি’র দশকের কবিদের থেকে আলাদা করতে সক্ষম হয়েছিল সেই ধারাটি শামীম খানের কবিতায় অনুপস্থিত। শামীম খানের কবিতার যে পাই মায়া তা মহাদেব সাহা’র কবিতার কিছু ছায়া ফেলে যায়। সবকিছুর উর্ধ্বে শামীম খানের অনুভূতির সুক্ষ প্রয়োগে কবিতাগুলো বেশ স্পর্শীয় হয়ে উঠেছে এ কথা নির্দি¦ধায় বলা যায়। কাব্যিক গীতলতাও শামীম খানের কবিতাকে অনন্য করে তুলেছে। আমার বিশ্বাস শামীম খানের কবিতা পাঠককে কোনভাবেই হতাশ করবে না।

মন্তব্য: