অসিত বিশ্বাস

নিজের সাথে পুনঃ পুনঃ সঙ্গমে অবরত যুদ্ধ করে আদি রঙ চাপা দিয়ে অমৃতস্য হতে চেয়েছিল, তাই ঠোঁটের নালঝোল, চোখের ক্যাতর, হৃদপিণ্ডের গোঙানী, ঝেড়ে মুছে শিরদাঁড়া টান টান করে সম্মুখে পা ছুঁড়তে শুরু করে ক্যাঁতড়া এবং সামনে কয়পা মারতেই জিন্দাবাদ আর জিন্দাবাদ। সেই জিন্দাবাদ ডিঙিয়ে যায় ভৌগলিক সীমানার ওপারে। ফলে ক্যাঁতড়ার মাথায় সুলতানি টোপর যেন উড়ে এসে জুড়ে বসে। 

কানাও মানুষের মত হাসে, ক্যাঁতড়ার অবস্থা হয়ে ওঠে। সেহেতু সে ইস্পাত দর্পে শার্টের কলার টিপে বোতাম আটে, চশমায় চোখ রাখের, চুলে চিরুণী মারে। ক্যাঙ্গারু স্বভাবে গলা কাঁখে। শুধু কি তাই? রাজার মুখে থু থু ছিটাতেও বাকি রাখে না। এছাড়াও দড়াদড়ির মত শুকনো আদমগুলো দিয়ে হিংস্র ক্রোধে রাজার পোঁদের কাপড় উল্টে সেখানেও উৎপাদন ফলাবার কসুর করে না। আর আমলা-গাবলা-গণ সার্ভেন্ট, ঘোড়েল, জলহস্তি, ধর্মবাণিজ্যিকগুলোকে মূত্র ফেনায় ভাসিয়ে শেষমেশ এক সময় ঘষা-ঘসি করে আগুনও জ্বালে। 

ক্যাঁতড়ার উৎস বীজ, জন্মসুড়ঙ্গ, উড়াল খাওয়া মাঠ-ময়দান, ঘিলু আর বোধিদ্রুমের স্থাবর-অস্থাবর বহু বিদিত। বহু লিঙ্গ হজমি দেহ-মগজ দোকানীদের কাছে সংবাদটা আরো কড়কড়ে। 

এক সময় গণ-কলজে খাওয়া শকুনের বিরুদ্ধে কড়া বিষাক্ত তীর ছুঁড়ে ক্যাঁতড়া জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ আর জিন্দাবাদ সংগ্রহ করে সোহাগের এক কিংবদন্তির ময়না হয়ে যায়। সীমানার সুতো পার হয়ে সেই কিংবদন্তির স্তুতি দিগি¦দিক ছড়িয়ে পড়ে। আর ঠিক তখনি কড়া দূরবীনপলকে বহু নুনুবাজেরা তীক্ষ্ণ নিরিখের মধ্যে আটকে ফ্যালে সোহাগের এই ময়নাটিকে। এবং নুনুবাজদের মধ্যে জমাট শলাপরামর্শ শুরু হয়ে যায়। শেষমেশ সিদ্ধান্ত গড়ায়, উড়–ক ময়না উড়–ক, উড়তে লাগুক, দেখা যাক, আরো কত উঁচুতে উড়তে পারে। 

সোহাগের ময়না উড়তে থাকে। উড়তে-উড়তে একবার মেঘেদের চাঁই ভেঙে আরো ভেতরে সেধিয়ে যায়। একবার উঁচু থেকে ডিগবাজি খেয়ে নামতে-নামতে বুক মগজ শিরদাঁড়াহীন বিধ্বস্ত খড়খড়ে নিরেট গ্রামের হৃদপিণ্ডের মধ্যে ঢুকে যায়। আবার রুঢ় ভঙ্গিতে শাঁ-শাঁ শব্দে নগরের চাঁদির উপর বসে। বসে কড়া চিকন দৃষ্টিতে সব পর্যবেক্ষণ কোরে উঁচু-নিচু গাড়াগর্তগুলো ঠোকরাতে শুরু করে। 

এভাবে ঠোকরাতে-ঠোকরাতে এক সময় খড়খড়ে রুক্ষ-রুগ্ন শুকনো হাত, পা, মাথামুণ্ডু, স্তনগুলো গ্রাসের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে শৃগালগুলোর বিরুদ্ধে ক্ষোভে দ্রোহে তাদের গুহ্যদ্বার দিয়ে এটা ওটা চালিয়ে দেয়। তারপরই চাকরগুলোর কণ্ঠনালী কামড়ে ধরে ন্যাংটো কোরে এক প্রকার রেপ করে। কঙ্কালগুলো দিয়ে করায়। তখন চারপাশ থেকে অজস্র বাহবার হাত তালি পড়ে। সেই হাততালির সরোবরে সদ্য রতিকেলি সমাপ্ত হংসের মতো কিংবদন্তি ডানা ঝাপটায়ে-ঝাপটায়ে ডুব পাড়ে, আহলাদে আটখানা হয়ে ডুবের নাচন করে। আর ভেতরে ভতের বিড়াল গর্জনের ভঙ্গি দেখায়। ভঙ্গিটা এ জমিনে উর্বর চাষাবাদের দক্ষ কৃষক আমি। আমি ছাড়া এ মাঠে কুর্নিশ পাবার মতো আর কেউ নেই। এই সব নাড়িভুড়ি পচাগলা ভেতরে খেলতে- খেলতে গলায় লাল রুমাল বাঁধা ষাড়ের মতো দিগি¦দিক শিং গুতোতে-গুতোতে ছুটতে থাকে। ছুটতে-ছুটতে এক সময় হঠাৎ এক খাঁচা-খোয়াড়ে লটকে যায় ক্যাতড়া। তখন চোখ জুড়ে নেমে আসে তার চৌদ্দ ক্রোশ অন্ধকার, অন্ধকারে সেই খাঁচার মধ্যে মাতাল ডিগবাজি খায়। আর খাঁচার শিক কমড়ে ফেরে। কিন্তু দুয়ার মেলেনা। অবশেষে খাঁচার শিকে চঞ্চুর ঠোককরে-ঠোককরে ও ঘষা-ঘষিতে আগুনও জ্বলে। সেই আগুন বহু শিশ্ন লোভি আবর্জনাগুলোর গায়ে, কলিজায় জ্বলুনি পুড়ুনি ধরায়। আর তখনি ঐসব গণিকাগুলোর ঘিলু তোলপাড় কোরে ওঠে। গণিকারা একত্রে বসে ঠোঁট খুলে সমস্বরে যূথবদ্ধ হয়, বলে, নেতিয়ে-নেতিয়ে ক্লিশে জাবর কাটা এখন আর নয়। আর ওকে মুক্ত পাখা ঝাপটিয়ে উড়–উড়– খেলতে দেওয়া যায়না। ও এখন প্রজাপতিমাংস খেকো শকুন হয়ে উঠেছে।

অতএব এখানে হাড় চাই চাই, হাড়। ওর অঙ্গার মুখের সামনে বহু যোনির ঘ্রাণযুক্ত হাড় চাই। এরকম উপযুক্ত থকথকে কাঁচা একখানা হাড় একবার গেলাতে পারলেই সব কাবার হোগিয়া। তারপর সিপিলিস,গনোরিয়া,ক্যান্সার যে কোন হাড় দেখালেই সেই দিকে খুরে দেবে ওর কামকেলি উৎস মুখও।

উলঙ্গ হয়ে বসে-বসে গোলটেবিল কোরে গণিকাগুলো দুই উরুর সন্ধিক্ষণ চুলকায় আর এই ফিকির আবিষ্কার করে।

এরপরই বহু বীর্য মাখানো হাড়ের ব্যবস্থা হয়। ওদিকে বীর্য মাখানো হাড়ের ঘ্রাণ পেয়ে শকুনটার রক্ত ও মগজ গর্জে উঠে এবং ভেতরের লাগামহীন ষাঁড়টা যেন মরেও মরতে চায় না। তখন বেশ্যাগুলো তাদের সোহাগী আরো প্রশংসনা মুখে নগ্ন শরীরে আরো নৈকট্যে এসে উরত চুলকায়। শকুনটা এখন আড়চোখে একবার চর্বিমাখা উরত দেখে, আবার ভেতরের ষাঁড়টার গলা চলুকায়, ভঙ্গিটা শ্যাম রাখি, না কুল রাখি। 

এই দোটনার মাঝে হঠাৎ বিশাল এক হস্তিনী এস শকুনটিকে কুর্নিশ করে বলে, এসো,কাছে এসো, এই সোনার  যৌবন এখন তোমার জন্য, এসো, তোমাকে দেবো …. শকুনটা ঠোঁট চাটতে চাটতে শিরদাঁড়া বাঁকিয়ে টানটান কোরে প্রেমিক ফণা তোলে।

হস্তিনা আবার  ইশারা করে, এসা, এদিকে এসো-

শকুনটার সহ্য মানে না, তার বিশাল কালোপাখা ঝাপটিয়ে পড়িমরি  কোরে হস্তিনার দুবেলা স্তন পানে ছুটেতে থাকে। আর সেই দিন থেকেই আপনার সাথে আপনার ভেতরের সঙ্গম ও রণকৌল শেষ হয় শকুনটার। এখন শিশু-কিশোর যুবক-বৃদ্ধ নারী- পুরুষের রক্ত মাংস অস্থি মজ্জা খাওয়া কাক-কুরুরের এক বদ্ধ ভূমিতে এসে হস্তিনী তার গোপন অঙ্গের বস্ত্র খুলে বলে- নে ,পাওনা মিটিয়ে নে। তখন বল্গাহীন ফ‚র্তিতে সমস্বরে আরো সব ঝাঁক মাংসাশীরা থই থই কোরে ওঠে ,বলে,এইতো মোক্ষম সুযোগ, নে- মিটিয়ে নে।

শকুনটা তখন একবার জিভচাটে আবার চোখ পিট পিট করে।

হস্তিনী তখন তার উষ্ণ শরীর শকুন শিশ্নে ছোয়ায়, সঙ্গে সঙ্গে শকুনটার ভিতেরর ইস্পাত- গোলা গবর হয়ে গলতে শুরু করে।   আর করোটির মধ্যে এক মাদকীয় বয়ার ঝড় ওঠে। সেই ঝড়ের ঘূর্ণিতে নাক ঠোঁট হৃদপিণ্ড আছড়ে গিয়ে পড়ে হস্তিনীর বহুবল­ভা  উলঙ্গ যোনিতে। এবং শকুনটা সাথে সাথে পুচ্ছ নাচিয়ে চুমুর পর চুমু কষতে থাকে।

সেই থেকে এই শকুনটা জাত ধরলো। এখন বেশ্যালয়- শিল্পালয়- শুড়িখানা-কল- কৈবল্যখানা স্বৈরাচার-গবেষণার ও আদমে বন্যতে কোন বিভক্তি তার চোখে রক্তে করোটতে ধরা পড়ে না। এক সময় তার বোধে যে ধাড়ি মাগীটাকে খুনি পাপিষ্টা ও তাজা মানুষখোকো শকুনী বলে মনে হতো সেই রাক্ষসীটাকেও এখন মনে হয় বীর্যবান দেবী। 

সর্বশেষ-শকুনটা এখন ফেলে আসা অতীতের সন্তাপ-উল্লাস কোন কিছুতেই তার ফনা আর উদ্ধত হয় না এখন। সেই উপেআর যন্ত্রণা আর তাকে জ্বালায় পোড়ায় না। এখন সে পো-পো কোরতে সমস্ত পরিপূর্ণতা তার হা মুখের মধ্যে এস ঢুকে যায়। এবং তার নব উষ্ণ শরীরের কাছে এস খলবল করে। ফলে এখন তার কাজ শুধু অণ্ডকোষ ঝুলিয়ে-তাজা হোক, বাসি হোক, পচা হোক, মরা হোক, বমি হোক, শুধু গিলা আর গিলা। সেই সঙ্গে কলেজ থেকে অতীতের আগুনকে পুরনো কাশির মতো গলা কেঁখে কেঁখে বেঝে ফেলা। এবং বর্তমান পঞ্চইন্দ্রিয় সংযুক্ত অঙ্গ-প্রতঙ্গেগুলোর বাতাসের ভাটিতে উন্মুক্ত রাখা। যেন সিটকে ফিরে না যায়। সেই মুখ গুলোর প্রতি মজবুত দৃষ্টি রাখা। আর জোর তালি বাজিয়ে সমস্ত উঁচু উঁচু অন্দর মহর পুরিদের জানান  দেওয়া, আমি এখন নোটি হয়েছি। কেউ যদি কিছু দিয়ে- কিছু কোরে খুশি হতে চাও তো এসা এ দুয়ার ব্যবহৃত সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য অবিরত সম্বর্ধিতভাবে উন্মুক্ত। হা….হা….হা…..

(সংকলিত)

মন্তব্য: