অরবিন্দ চক্রবর্তী- এর কবিতা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

ব্যবহারিক

চোখ দেখেছিল, আমার সিঁড়ি কার বন্দিশ করতে করতে উপরে উঠে যায়। এদিকে আমি আলোর শরীর নিয়ে নদীর ভরসায় মোম গেড়ে বসে থাকি। উঁচুত্যকা আশকারা দেয়―কানকথায় মুকুট ছুঁয়ে আসতে বলে―রাবনসম্প্রদায় জানে না, আমি সমতলকে কথা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঘাটোয়াল। কথার সঙ্গে কথা বলি। হৃদয়ভাণ্ডকে বোঝাই এ আমার আনন্দলোক―নাচুকের ঘুঙুর থেকে একটি পালক ছিটকে গেলে সে দায় তোমার করতালির।

কুস্তিজীবন

কুস্তিখেলার পাশে দাঁড়ানো উত্তেজনা থেকে লেখা হয় একজন মাসলম্যানের জীবন। এত জল এত রক্ত কোনটাকে একাকার ঘাম বলা হবে বুঝে ওঠার আগে ঝরে যায় উল্লাস। সহায় দস্তানা লুটিয়ে করে ফোঁসফাঁস। চোখ ছিটকে পড়ে পিংপং বলের ছুটন্তি নিয়ে। তখন পৃথিবীর মানুষ হয়ে বোঝা যায়, তুমি কোনো এক হত্যা-জগতের রাহুত―আধখাওয়া ফলের আবেদন দেখেছ―অথচ বুঝতে চাইছ না ফুলের মতো ভাবনাগুলোও ফোটাতে পারে ঋতিকথা। 

বৃন্দাবন

যা কানে আসে, সবই তার মনে মনে এবং ভাবাও যায়, বাঁশি বাজে। ভেতর থেকে ছিঁড়েখুড়ে বেরিয়ে আসে সাপের কাহালি। তোমার অন্যমনস্ক বৃন্দাবন হাফ ছেড়ে বাঁচে। বাঁচাটা একার নয়, পাপের, কুৎসার। লীলা, নিশ্চয়ই তুমি বিবাগী নও! তাহলে এবার কুষ্ঠরোগীর পাশে উন্মোচন করো আদমসুর; দেখবে, কেউ কেউ ‘তুমি ধ্যানী, তুমি ধ্যানী’ বলে পালাচ্ছে হৃদয়ম থেকে। পাকাচ্ছে জিলাপি। জিকির থেকে ফেলে দিচ্ছে জীবনের জল। খুলে ফেলছে নাচের মহিমা। ‘মেনকা মেনকা’ বলে ময়ূর যখনই দেবে ডাক; দেখবে, চারপাশ থেকে খসে পড়ছে যুধিষ্ঠিরের মুখোশ। 

পাখালি

অপেক্ষা করো, লাশ হয়ে যাওয়া শরীর কোনো মুহূর্তে নেচে উঠবে। যখন জেনেছে, আংশিক সত্য হয়ে থাকা প্রাণ কুস্তিগিরের পক্ষে যায় না, এতে পাবে না সে তুলতুলে জগদীশ। সেই থেকে মাছ তার প্রিয় বিষয়, বকের পায়ে হাঁটা তার বৈকালিক পাখালি। ফলে সন্ধ্যা ও বিকেলের সন্ধি বরাবর অবস্থান কাউকে নিতেই হবে। জনকের ভ‚মিকায় গীতিনৃত্যে সঙ্গত ধরতেই হবে। আমাদের শ্যাওলা ছেঁটে যেতে হবে তলিয়ে যাওয়া ডুবুরির খোঁজে। যেখানে আজও খুল্লাম-খুলছি করছে অরূপমহুয়ার তলপেট।

মন্তব্য: