তুষার প্রসূন এর কবিতা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

নেই এর দিকে

দূরত্ব কাকে বলে জানিনা, অরণ্যের বৃক্ষেরা যত কাছাকাছি থাকে আমার আমিত্ব, শহরের ল্যামপোস্ট, সেন্টু-র টি-স্টল, রাস্তায় পড়ে থাকা ইট, পাথর, শুশান, সমাধী আরও যত কুকুর, পাগল, লেসফিতাওয়ালা সবই মিশেছে এই হৃদয়ে এসে।

এসেছে পূর্বস্মৃতি, ঘুড়ি ওড়াবার দিন, অবলীলায় স্বপ্ন দেখার দিন, সেদিন মনে হয়েছিল মহৎ আকাশ, মহৎ সমুদ্র, মহৎ তপবন, যেদিন অরণ্যছায়ায় আটকে পড়েছিল ইমোশন, রোদ্দুর গাছের মগডালে বসে আমার বালকবেলা দেখেছিল, নীরবতা ডিঙ্গিয়ে বুড়ো গিরগিটি শুকনো পাতা ভেঙ্গে চলে গিয়েছিল আমার দৃষ্টি লেজের ডগায় নিয়ে, স্নেহময় হেমন্ত দু’হাতে শীতের কুয়াশা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো, সাপ নয় সাপের ভয় হেলেদুলে ভয় দেখাতো মনের মধ্যে…

সেই দিন নতুন খামে পুরে আসে না আমার শহরে।

মানুষ বেড়েছে বংশরক্ষার বোকা বোকা নামতা আয়ত্বে রেখে। কৌশলে ঢুকে পড়েছে রাজার যৌগনীতি সরলতার মন্ত্রমধ্যে। ধ্যানচূর্ণ এ জীবনে অস্থির হৃদয়ের কম্পন, অসুস্থ নারী, অসুস্থ পুরুষ যে যার হাত ধরে শক্তি বাড়ায় না আর, অসুস্থতা বাড়ায়। মানুষে মানুষে, মনুমেন্টে, যুদ্ধবিমানে সবাই উন্নতির পতাকা নিয়ে পা পিছলে পড়ে আছে মুক্তোগর্ভা ঝিনুকের পাশেই। পৃথিবীর সব শহর আজ আমার শহরের মত কাছে ও দূরের পড়ে থাকা অভিলাষী আশা। কি যেন নেই, খুঁজতে খুঁজতে কেবলমাএ নেই এর দিকে চেয়ে থাকা…

মাটির ডাকবাক্সে স্বয়ংক্রিয় পােস্টম্যান

নাগরিক নিয়ন আলো নিভে গিয়ে যখন সে মাটির ডাকবাক্সে ঘুমিয়ে পড়ে, স্বয়ংক্রিয় পোস্টম্যান এসে নিয়ে যায় লাবণ্যখচিত আলো-আঁধারের কালো গলিতে। তোমার বোঝাপড়ার মাঝে আমরাও পিওনের হাত ধরে চলে যাই হাতবদলের পরিখায়। নারীর পড়ন্ত যৌবনের ছাঁয়ায় গোধূলী বিলি করি। ঘুমের নেশায় পথ চলা প্রাচীন ডাকবাক্সের দিকে তাক করে যাদের সঙ্গোপনী মায়া এগিয়ে গ্যাছে, সেখানে পড়ে আছে মুমূর্ষ পথঘাট আর মন্ত্রপোড়া ছাই। একদিন পড়ন্তদিনে সেই ধুলো উড়িয়ে আবার নাগরিক আলোয় বিনিময় হয়ে ফিরে আসি।

মন্তব্য: